রাজধানীর চানখারপুলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মার্কেটের ১৩৭টি দোকানের সোয়া ১ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। মার্কেটের দোকানমালিকদের নিয়ে ‘সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি সমিতির নামে এই টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
বাণিজ্যিক এলাকায় বিদ্যুৎ বিলের ইউনিট ১২টা হলেও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মার্কেটের প্রতিটি দোকান থেকে ইউনিটপ্রতি মূল্য নেওয়া হয় ২২ টাকা। এরপরও ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) কাছে ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। প্রতি ইউনিটের বিদ্যুৎ বিল ২২ টাকা করে গত ছয় বছরে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দোকানমালিকরা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মার্কেটের উন্নয়নের জন্য সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নামে পাঁচটি দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলোর ভাড়া তুলে সমিতি মার্কেটের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করে। অভিযোগ করা হয়েছে, সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক করিম হোসেন মনা, সহসভাপতি আমির হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিরু মিয়া, ক্যাশিয়ার সোহেল দ্বীন মোহাম্মাদের যোগসাজশে পাঁচটি দোকানের ভাড়া তুলে নিজেরাই ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। মার্কেটে একটি টয়লেট ছিল। সেটি সমিতির নেতৃবৃন্দের যোগসাজশে ভেঙে ফেলে সেখানে একটি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এই ভাড়ার টাকা নিজেরাই আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মার্কেটের বেশির ভাগ দোকান ফার্মেসি। এর পাশাপাশি কয়েকটি ফাস্ট ফুড, খাবার ও হাসপাতালে রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র বিক্রির দোকান রয়েছে।
মার্কেটের ১২৪ নম্বর দোকান কুমিল্লা মেডিক্যাল হলের মালিক সুমন সরকার বলেন, মার্কেটের সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু এখানের সমবায় সমিতির কী কাজ এটা আমার জানা নেই। তারা প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল যা আসে, তার বেশি টাকা নেয়। তবুও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। শুনেছি ছয় মাসের বিল বকেয়া রয়েছে।
এ ব্যাপারে সততা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন মনা বলেন, ২০১৯ সালে এই মার্কেটের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমার কাছে। এর আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা প্রতি ইউনিট ২৫ টাকা করে নিতেন। সেই সময়ে ১৫ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে চলে গেছেন। এখন যে টাকা বকেয়া রয়েছে তা অল্প অল্প করে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাবসায়িক বিদ্যুৎ বিল এভাবেই দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
জানতে চাইলে ডিপিডিসির রমনা আঞ্চলিক অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী বশির আহম্মেদ বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মার্কেটের বিদ্যুৎ বিল বাবদ কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে। প্রতি মাসেই কিছু কিছু বকেয়ার টাকা দিচ্ছেন ঐ মালিক সমিতির লোকজন। তারা ধীরে ধীরে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।