রোববার রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাঙামাটি শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু হয়েছে।
শহরের একমাত্র অভ্যন্তরীণ যানবাহন অটোরিকশা সচল হওয়ায় মানুষ যাতায়াত করছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের থেকে সোমবার সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও যাত্রীর উপস্থিতি ছিল কম।
তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও ৭২ ঘণ্টার জন্য ডাকা সড়ক ও নৌপথ অবরোধের কারণে সোমবার দিনে দূরপাল্লার যানবাহন ও কাপ্তাই হ্রদে নৌ-যান চলাচল ছিল বন্ধ। ৭২ ঘণ্টার অবরোধের শেষ দিনে রাঙামাটি থেকে বান্দরবান-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের উদ্দেশে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। আন্তঃজেলা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। ৩ দিনের অবরোধ শেষ হলেও নতুন কোনো কর্মসূচি আসেনি। এতে করে মঙ্গলবার থেকে আন্তঃজেলা যানবাহন চলাচল শুরু হবে। সোমবার রাত থেকেই রাঙামাটি থেকে ঢাকামুখী ছেড়ে গেছে।
এর আগে, গত শুক্রবার ঢাকায় ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার সমাবেশ’ থেকে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌ-পথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানায় পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
এছাড়া শুক্রবার সকালে রাঙামাটি শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর দুপুরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। রাতে আবার যানবাহন হামলা, ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছিল রাঙামাটি পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের সংগঠনসমূহ।
এদিকে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রাঙামাটি শহরের পরিস্থিতি। সোমবার সকাল থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপা বাজার বসেছে। বাজারে পাহাড়ি-বাঙালি ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের দেখা গেছে। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় উপস্থিতি ছিল অনেকটা কম। বিকেলে কল্যাণপুরে সড়কের পাশে ও আসামবস্তিতে বাজার বসেছে। সেখানে পাহাড়িদের বাজারে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
শুক্রবারের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ধ্বংসস্তূপগুলো বেশিরভাগই সেভাবে আছে। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার রাঙামাটি জোন চেয়ারম্যান মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে রাঙামাটি-চট্টগ্রামসহ খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সঙ্গে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। সকাল থেকে কাপ্তাই হ্রদেও লঞ্চ চলাচল করবে।
রাঙামাটির জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, রোববার রাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকেই ঢাকার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে বান্দরবান-খাগড়াছড়ির সঙ্গেও যাত্রীবাহী বাস চলবে। রাঙামাটি শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে মানুষের সমাগম বেড়েছে।