ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের এক যোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। খবর অনুযায়ী, ওই যোদ্ধাটি সম্ভবত হামাসের রাজনৈতিক শাখার নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তারা গাজার একটি ভবনে তিন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে একজন সিনওয়ারের মতো দেখতে।
আইডিএফের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নিহত মরদেহটি গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার মাস্টারমাইন্ড ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হতে পারে। মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ চলছে এবং কর্তৃপক্ষ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিক মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফলও সিনওয়ারের মরদেহ হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করছে।
ইসরায়েলি সেনারা জানান, গাজার একটি ভবনের নিচতলায় হামাস যোদ্ধাদের ওপর গুলি চালানোর সময় সম্মুখ গোলাগুলি শুরু হয়। সেই সময়ে হামাস যোদ্ধারা পালানোর চেষ্টা করলেও কিছু যোদ্ধা নিহত হয়। পরে, সেনারা যখন ভবনে প্রবেশ করে, তখন তারা একটি মরদেহ দেখে যা সিনওয়ারের মতো মনে হয়েছে।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সেনারা সিনওয়ারকে টার্গেট করে হামলা করেনি এবং ঘটনাটি আকস্মিকভাবে ঘটে। মরদেহের ছবি ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়, তবে পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা সরিয়ে নেওয়া হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলার পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার, এ বিষয়ে আইডিএফের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর সিনওয়ারের নিয়োগ হয়েছিল এবং তখন থেকেই তাকে হত্যার অঙ্গীকার করে ইসরায়েল।
আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “ইয়াহিয়া সন্ত্রাসী। তিনি ৭ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।” তিনি আরো জানান, “তার জন্য শুধুমাত্র একটি জায়গা আছে—নিহত মোহাম্মদ দেইফ এবং ৭ অক্টোবরের অন্যান্য সন্ত্রাসীদের পাশে।”
এ ঘটনার ফলে গাজায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে। হামাস এখনও এই ঘটনায় কোনো মন্তব্য করেনি, তবে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও গাজার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে, কারণ এই ঘটনা অঞ্চলের রাজনৈতিক এবং সামরিক দৃশ্যপটে একটি নতুন মোড় নিয়ে আসতে পারে।
সার্বিকভাবে, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মরদেহ উদ্ধার এবং এর সাথে জড়িত ঘটনাবলী গাজার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে এখন প্রশ্ন, আগামীকাল তারা কিভাবে একটি নতুন নেতৃত্বের মুখোমুখি হবে এবং কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।