কেশবপুরে বন্যার পানিতে ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রাখা হয়েছে শ্রেণি কার্যক্রম। অন্যত্র ক্লাস নিচ্ছেন অনেক প্রতিষ্ঠান। এ কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। খেলার মাঠে বন্যার পানি থৈ থৈ করায় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে লেখাধুলা থেকেও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কলেজ, ৩১টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি মাদ্রাসা প্লাবিত হয়েছে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদ নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নের ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেক স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় ক্লাস নিতে হচ্ছে অন্যত্র। বন্যার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পারেনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, সম্প্রতি বন্যায় তাদের ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে।
কাটাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় ব্রহ্মা জানান, তার বিদ্যালয়টি প্রায় দুই মাস বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। স্কুলের সব শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় পাঠদান বন্ধ আছে। শুধুমাত্র অফিসকক্ষে নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠের মধ্য দিয়ে ১৫০ ফুট বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকো দিয়েই শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীরা অফিসকক্ষে যাতায়াত করছে। স্কুলের মালামাল ও শৌচাগার বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে। বন্যার পানি নিষ্কাশনের জন্য আবেদন করেছেন তিনি।
প্লাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বন্যার পানিতে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তালিকা করে বরাদ্দ চেয়ে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
— এ এস এম জিল্লুর রশিদ, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।
উপজেলা রাজনগর বাঁকাবর্শী মোড়লপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, বন্যার পানি স্কুলের ৩টি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ায় ক্লাস নিতে হচ্ছে অন্যত্র। স্কুলের পাশে মকবুল হোসেনের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
উপজেলার সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা জানান, প্রায় ১ মাস ধরে তার স্কুলের মাঠে পানি জমে আছে। ভবনের নিচ তলার ২টি শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় শ্রেণি কার্যক্রম উপরের তলায় চালানো হচ্ছে।
উপজেলা মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, স্কুলের মাঠে বন্যার পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
উপজেলার মধ্যকুল মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে অবহিত করা হয়েছে।
হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদীর পলি অপসারণে খনন কাজ চলছে। দ্রুতই পানি নিষ্কাশন হবে।
— জাকির হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে সূত্র জানায়, কেশবপুরে ১টি সরকারি ডিগ্রি কলেজ, ৩১টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪টি মাদ্রাসার মাঠে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠে আসায় লেখাপড়াও ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ এস এম জিল্লুর রশিদ বলেন, প্লাবিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বন্যার পানিতে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তালিকা করে বরাদ্দ চেয়ে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, ৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের মাঠ উঁচু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন,হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদীর পলি অপসারণে খনন কাজ চলছে। দ্রুতই পানি নিষ্কাশন হবে।