জাতীয়

সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, তিন সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ

সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, তিন সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশসৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, তিন সচিবসহ ১২ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে রাতারাতি শতাধিক স্থাপনা নির্মাণ করায় তিন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সরকারি ১২ জন কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ রোববার বেলার আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা এই নোটিশ পাঠিয়েছেন। ডাক বিভাগের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে এই নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এবং সৈকতের পাশের স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকা অঞ্চলে গড়ে তোলা ও নির্মাণাধীন সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে সমুদ্রসৈকতের যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার সমুদ্র তীরবর্তী উন্নয়ন নিষিদ্ধ জোনের ৩০০ মিটার এবং পৌরসভা বহির্ভূত নিয়ন্ত্রিত জোনের ৫০০ মিটার এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বৃক্ষরোপণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নোটিশে এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ নোটিশ পাঠানোর ৭ দিনের মধ্যে বেলার আইনজীবীকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

যেসব কর্মকর্তাদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন—       পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।

নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার আইনজীবী জাকারিয়া সুলতানা বলেন, কক্সবাজার সৈকতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করার এবং স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে নির্মিত সকল স্থাপনা ভেঙে ফেলার বিষয়ে উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৩ সালে কক্সবাজারে একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকার। এ মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার জোয়ার-ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে সৈকত সংলগ্ন প্রথম ৩০০ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই জোনে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এরপরও সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ দুঃখজনক।

পরিবেশবাদী সংগঠনের সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কক্সবাজার শহরের সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক দোকান। এই পয়েন্টের সড়ক ও ফুটপাতেও বসানো হয়েছে আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার। এর দক্ষিণ পাশে কলাতলী পয়েন্টের সি ক্রাউন হোটেলের সামনে তৈরি করা হয়েছে একাধিক দোকান। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাতারাতি এ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বালিয়াড়ি দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনায় নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। সৈকতের বালুর ওপর স্থাপনা নির্মাণের ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও সৌন্দর্য।

নিউজ ডেস্ক:

Leave a Reply